নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাষ্ট্রপতি যে চিকিৎসা সেবা পাবে দেশের প্রান্তিক জনগণ একই সেবা পাবে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী কোটা সংস্কার আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। রাঙামাটিতে কোন আইসিইউ নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমি জানতে পেরেছি রাঙামাটিতে কোন আইসিইউ নেই। বিষয়টা অত্যন্ত দুখজনক। অসুস্থ্য হলেই আপনারা (এমপি-মন্ত্রীরা) সিঙ্গাপুর যান। অথচ দেশের মানুষ উন্নত চিকিৎসা সেবা পান না। প্রান্তিক জনগণ সিঙ্গাপুর যেতে পারেনা। তবে সিঙ্গাপুরের চিকিৎসা সেবা বাংলাদেশে দেওয়া সম্ভব। পার্বত্যাঞ্চলে শিক্ষা, চিকিৎসা ও যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত করতে অন্তবর্তীকালীন সরকার কাজ করে যাচ্ছে।

সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) বিকেলে রাঙামাটি শহিদ মিনার প্রাঙ্গনে গণঅভ্যুত্থানের প্ররণায় আহতদের সাথে সাক্ষাৎ এবং দূর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ছাত্র নাগরিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, আমরা নিশ্চিত করতে চাই একজন শিক্ষার্থী ঢাকায় বসে যে ধরণের শিক্ষার সুযোগ পাবে, ঠিক একইভাবে পাহাড়ের প্রান্তিক পর্যায় পর্যন্ত একই ধরণের শিক্ষার সুযোগ পাবে। আমরা এমন একটা প্রজন্ম চাই যেই প্রজন্ম ক্ষমতাকে প্রশ্ন করবে। যেই প্রজন্ম পাওয়ার পলিটিক্স এর পরিবর্তে পলিসি পলিটিক্স এর ইনট্রোডাকশন দিবে। এই প্রজন্ম যদি প্রশ্ন করা বন্ধ করে দেয় তবে আবারও ফ্যাসিজম জেঁকে বসবে।
১৯৯০ সালেও গণঅভ্যুত্থান হয়েছিলো। কিন্তু জনগণের আশা আকাঙ্খার বাস্তবায়ন ঘটেনি। তাই আমাদের কে এবার সচেতন হতে হবে। ছাত্ররা রাজনীতি নয়, তারা লেখাপড়া করবে। তবে তাদের রাজনৈতিকভাবে সচেতন হতে হবে। যখনই ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে তখনই আমাদের রুখে দাড়াঁতে হবে বলেও যোগ করেন তিনি।
এসময় চট্টগ্রামের সহ-সমন্বয়ক খান তালাত মাহমুদ রাফিসহ ঢাকা-চট্টগ্রাম থেকে আসা সমন্বয়ক, সহ-সমন্বয়ক ও রাঙামাটির বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা সহশ্রাধিক শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে তালাত মাহমুদ বলেন, স্বৈরাচার ও তার দোসররা পাহাড়ের সৌন্দর্য্য দেখেছে কিন্তু পাহাড়ের চিৎকার কখনও দেখেনি। কিন্তু যখন পাহাড় চিৎকার দিয়েছে তখন সেই স্বৈরাচার আর তার দোসররা বাংলা ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছে।
অনুষ্ঠান শেষে হাসনাত আব্দুল্লাহ ও তার সফরসঙ্গীরা সভাস্থল ত্যাগ করার সময় শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে এসময় সমন্বয়হীনতার অভিযোগ ওঠে। এক পর্যায়ে শিক্ষার্থীদের সাথে বাকবিতণ্ডা ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটতে দেখা গেছে। ঘটনার এক পর্যায়ে আমেরিকার দালাল উল্লেখ করে হাসনাত বিরোধী বিভিন্ন শ্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। ঘটনা আঁচ করতে পেরে সটকে পড়েন উত্তাল ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া এই সমন্বয়ক। এসময় এই সমন্বয়কের গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে বেশ কজন উশৃংঙ্খল শিক্ষার্থী।
এর আগে “আবু সাইদ মুগ্ধ, শেষ হয়নি যুদ্ধ” শ্লোগনে মুখরিত হয় রাঙামাটির কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার। এসময় স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে বিভিন্নভাবে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মিলন মেলায় পরিনত হয় কাপ্তাই লেকের পাড়।