নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটির নানিয়ারচরে হাজারো পূণ্যার্থীর সমাগমে সম্পন্ন হলো রত্নাংকুর বনবিহারের ২৬তম কঠিন চীবর দান।
বৃহস্পতি ও শুক্রবার দু’দিন ব্যাপি অনুষ্ঠানে ধর্মীয় মর্যাদা ও উৎসব উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে পালিত হয়েছে কঠিন চীবর দান।
এ উপলক্ষে ত্রিশরণ সহ পঞ্চশীল প্রার্থনা, মৈত্রী ভাবনা, কঠিন চীবর দান, বুদ্ধ মূর্তি দান, সঙ্ঘ দান, অষ্ট পরিষ্কার দান, হাজার বাতি দান, আকাশ প্রদীপ দান, কল্পতরু দান সহ নানাবিধ দানের আয়োজন করা হয়।
রাজন চাকমা ও অন্তরা চাকমার যৌথ সঞ্চালনায় এবং বিহার পরিচালনা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক উষাকিরণ চাকমার সার্বিক সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ধর্মীয় সভায় গৌতম বুদ্ধের অমৃতবাণি স্বধর্ম দেশনা প্রদান করেন, ফুরোমন আন্তর্জাতিক বন ভাবনা কেন্দ্রের অধ্যক্ষ ভৃগু মহাস্থবির, মনিপুর বন বিহারের অধ্যক্ষ বৈশিষ্ট মহাস্থবির, রত্নাংকুর বন বিহারের অধ্যক্ষ ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত- মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা ও বাস্তবায়ন সংস্থা চট্টগ্রাম বিভাগের প্রধান উপদেষ্টা (ভি.আই.পি) বিশুদ্ধানন্দ মহাস্থবির।
এতে বিহার পরিচালনা কমিটির সভাপতি কমল কান্তি দেওয়ান এর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, পার্বত্য চট্রগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান (প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত) সুপ্রদীপ চাকমা।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে নানিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আমিনুল এহসান খান, জেলা পরিষদ সদস্য ইলিপন চাকমা, সাবেক্ষং ইউপি চেয়ারম্যান সুপন চাকমা, নানিয়ারচর সদর ইউপি চেয়ারম্যান বাপ্পি চাকমা, বিহার কমিটির সাধারণ সম্পাদক চাকমা প্রভাত কুসুম চাকমা সহ উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যে সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, বৌদ্ধ ধর্ম মানুষ কে শান্তির কথা বলে। সংঘাত নয় বরং পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠা করতে হবে। পাহাড়ের সাধারণ মানুষ অনেক শান্তি প্রিয়। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড এই এলাকার গণমানুষের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা কফি, কাজু বাদাম, ইক্ষুর পাশাপাশি বিভিন্ন সম্ভাবনাময় কৃষি নিয়ে কাজ করছি। যাতে সাধারণ কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হতে পারে। পাহাড়ের উন্নয়নে শিক্ষার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, আমাদের কে কোয়ালিটি এডুকেশন এর দিকে নজর দিতে হবে।
শুক্রবার অনুষ্ঠানের ২য় অধিবেশনে এতে অংশগ্রহণ করেন, সাবেক উন্নয়ন বোর্ড চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সহ সভাপতি নিখিল কুমার চাকমা ও নানিয়ারচর জোন প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন সাদমান সাকিব অন্তুু।
এসময় নানিয়ারচর জোনের পক্ষ থেকে শুভ দানোত্তম কঠিন চীবর দানোৎসব অনুষ্ঠানে আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন ক্যাপ্টেন সাদমান সাকিব।
বক্তব্যে জোন প্রতিনিধি বলেন, ধর্ম যার যার উৎসব সবার। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এই মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী তথা নানিয়ারচর জোন তার দায়িত্বপূর্ণ এলাকার পাহাড়ী জনপদে শান্তি-শৃঙ্খলা ও সম্প্রীতির বন্ধনে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এলাকায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীসহ সকল জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে জনসাধারণের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন এবং যেকোন প্রয়োজনে নানিয়ারচর জোন এলাকাবাসীর পাশে আছে বলেও যোগ করেন তিনি।
এবিষয়ে কমল কান্তি দেওয়ান বলেন, চীবরদান বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের গুরুত্ববহ একটি অনুষ্ঠান। বিশাখা কর্তৃক প্রবর্তিত মহৎ দানোৎসব। এক রাতে তুলা হতে সুতা তৈরী ও বৌদ্ধ ভিক্ষুদের চীবর (বস্ত্র) বুনতে হয়। বৌদ্ধ ধর্মালম্বী নারীরা অনেক প্ররিশ্রমে এ কাজটি করে থাকেন।