আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ
একদিকে যেমন গোটা ভারতে (India) লোকসভা ভোটের (Lok Sabha Election) প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে তেমন বাংলাতেও (West Bengal) এখন নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। কিছুদিন আগেই পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত ভোট সম্পন্ন হয়েছে। আর তারপরেই ২৬ জুলাই উত্তরবঙ্গের (North bengal) ধূপগুড়ি (Dhupguri) বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি (Bharatiya Janata Party) বিধায়ক বিষ্ণুপদ রায়ের আকস্মিক মৃত্যু ঘটে। আর এই কারণে ধূপগুড়ি কেন্দ্রে উপনির্বাচনের ঘোষণা করা হয়।
বর্তমানে ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচনের জন্য বিজেপি সহ সমস্ত দল থেকেই প্রার্থী ঘোষণা হয়েছে। আগামী ৫ সেপ্টেম্বর ওই কেন্দ্রে উপনির্বাচন হতে চলেছে। বিজেপির তরফ থেকে এবার শহীদ জওয়ান জগন্নাথ রায়ের স্ত্রী তাপসী রায়কে প্রার্থী করা হয়েছে। এছাড়াও তৃণমূলের তরফ থেকে প্রার্থী হয়েছেন নির্মলচন্দ্র রায়। এবং বাম-জোটের প্রার্থী হলেন ঈশ্বরচন্দ্র রায়।
উল্লেখ্য, এই কেন্দ্র রাজবংশী ভোটবহুল বলেই পরিচিত। তাই সকলেই রাজবংশী সম্প্রদায় থেকেই প্রার্থী করেছেন। আর প্রচারের ঠিক শেষের দিকে সমস্ত দলই সেখানে ঝড় তুলেছেন। শনিবার তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক তথা ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও সেখানে প্রচারে গিয়েছিলেন। তিনি সেখান থেকে INDIA জোট ক্ষমতায় আসলে দেশবাসী ৫০০ টাকায় গ্যাস সিলিন্ডার পাবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন। তবে, গতকাল ওনার মুখ থেকে বাম বা কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তেমন কোনও মন্তব্য শোনা যায়নি। ওনার নিশানায় প্রথম থেকে শেষ অবধি বিজেপিই ছিল।
এদিকে, গেরুয়া শিবিরের পক্ষ থেকেও সুকান্ত মজমুদার, শুভেন্দু অধিকারীরা লাগাতার প্রচার করে যাচ্ছেন। গতকাল সুকান্ত মজুমদারের হাত ধরে ধূপগুড়ি বিধানসভার প্রাক্তন তৃণমূল বিধায়ক তথা হেভিওয়েট নেত্রী মিতালী সরকার বিজেপিতে যোগ দেন। নির্বাচনের ঠিক আগে এই দলবদল তৃণমূলের ভোটে অনেকটাই প্রভাব ফেলতে পারে বলে মত রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের।
অন্যদিকে, বামেরাও কম জাননা। তাঁরাও ধূপগুড়ি কেন্দ্রে লাগাতার প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন। সাগরদিঘির মতোই ফের বড়সড় চমকের অপেক্ষায় রয়েছে বামেরা। তবে শেষমেশ কার ভাগ্যের শিকে ছিঁড়বে, তা ৮ই সেপ্টেম্বরেই জানা যাবে। তবে এই প্রচারের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে এক নতুন বিতর্ক।
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট ভাইরাল হচ্ছে, যেখানে প্রাক্তন বাম সাংসদ তথা বর্তমান CPIM রাজ্য সম্পাদক এবং পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমকে (Md. Salim) প্রচার শেষে ধূপগুড়ি থেকে কলকাতায় ফিরে আসতে দেখা যাচ্ছে। ফেসবুকে বামেদের একটি গ্রুপে একটি প্রোফাইল থেকে তিনটি ছবি শেয়ার করে ক্যাপশনে লেখা হয়েছে, ‘উনি হলেন #CPIM এর রাজ্য সম্পাদক ও পলিটব্যুরো সদস্য কমরেড Md Salim মহঃ সেলিম।। ঠিক সাধারণ মানুষের সাথেই ধুপগুড়ি থেকে কলকাতা ফিরছেন ট্রেনে,, কোনো আরম্বর নেই।। হ্যাঁ,, আমাদের নেতারা কমরেডরা ঠিক এইরকমই হয়।।”
এবার এই ছবি নিয়ে বাম বিরোধীরা কটাক্ষ শুরু করেছেন। অনেকেই কমেন্ট করে বলছেন যে, ‘সাধারণ মানুষ হলে AC কামরায় ভ্রমণ কেন?” জেনারেল বগিতেও তো আসা যায়। আবার কেউ কেউ কটাক্ষ করে লিখেছেন হাতে iPhone’ও আছে?”
প্রীতম নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন ‘জেনারেল বগিতে উঠলে তো আরো বেশি খেটে খাওয়া মানুষের কাছে পৌঁছোন যেত”। যদিও পাল্টা দিতে ছাড়েন নি বাম সমর্থকরাও। মৃণাল নামের এক ব্যক্তি লিখেছেন, ‘কমিউনিস্ট রা নিজে ভালো থাকেন। এবং সাধারণ মানুষ কে ভালো রাখতে চেষ্টা করেন। সেই কারণে অনেক ত্যাগ স্বীকার করে থাকেন। যারা আলোচনা করছেন তাদের কাছে আবেদন ভালো করে খোজ নিয়ে দেখবেন সেলিম সাহেবে পার্টি না করলে অনেক ভালো চাকরি করতে পারতেন। লোক সভার সদস্য ছিলেন। কোন রকম ধান্দা বাজি করেন নাই।”
বর্তমানে ধূপগুড়ি কেন্দ্রের উপনির্বাচন নিয়ে যেমন পারদ চড়েছে। তেমনই মহম্মদ সেলিমের এই তিন ভাইরাল ছবি নিয়েও সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড় উঠেছে। একদিকে যেমন বাকিরা বামেদের কটাক্ষ করতে ব্যস্ত, তখন বামেরাও পাল্টা জবাব দিয়ে সবার মুখ বন্ধ করেছেন।