॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়িতে সম্প্রতি বন্যায় ও পাহাড়ি ঢলে বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে উপজেলার নিচু এলাকা গুলো। আগাম ফসলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসহ উপজেলার বিএডিসি ঝিড়ি বাঁধগুলো হুমকির মুখে পড়েছে।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ও বাইশারি ইউনিয়নের বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) ঝিরি বাঁধ গুলো। আর এসব ক্ষতিগ্রস্ত বাধ গুলো রবিবার সকালে পরির্দশন করেছেন বিএডিসির কর্মকতারা। এদিকে এলাকা জুড়ে বুরো চাষের পানি সংরক্ষন এর মাধ্যম হিসাবে কাজ করে আসছে বিএডিসির ঝিরি বাঁধ গুলো।
বিএডিসি অফিস সূত্রে জানা গেছে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে দুই পাহাড়ে ঝিরিতে মাটির বাঁধ তৈরী করে পানি সংরক্ষণ করে বুরো চাষাবাদের জন্য বাস্তবায়ন করে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) রাঙ্গামাটি জোন বিগত ২০০৬ সালে তিন পাহাড়ি প্রকল্পের মাধ্যমে।
বান্দরবান জেলায় ক্ষুদ্র সেচ বিভাগের আওতায় প্রকল্প গ্রহন করে ঐ সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার সোনাইছড়ি,বাইশরি,নাইক্ষ্যংছড়িসদর ইউনিয়ন বিভিন্ন এলাকায় দুই পাহাড়ের মাঝ খানের ঝিরিতে মাঠির বাঁধ দিয়ে পানি সংরক্ষন শুরু করে।
এর ধারা বাহিকতায় তিন জেলায় সম্বনিত কৃষি উন্নয়ন প্রকল্প দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ ও ২০১১সালে শেষ হয়। পরবর্তিতে বিএডিসির ঝিড়ি বাঁধের ব্যাপক চাহিদা ও কৃষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্মসূচি মাধ্যমে বিভিন্ন সময় নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলায় সদর ইউনিয়নে ৭ টি ঝিরি বাঁধ।
সোনাইছড়িতে ৭ টি, বাইশারীতে ২টিসহ নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলাতে মোট ১৬ টি ঝিরিতে বাঁধ নির্মাণ করে বিএডিসি কোন ধরনের মেরামত করতে পারেনি সংস্থা।
প্রতিটি বাঁধ মাটি দিয়ে তৈরি কাঠের বল্লী ড্রামশীট দিয়ে পেলাসিড়িং ও পাকা ড্রেইন দিয়ে চলে অতিরিক্ত পানি নিস্কসনের কাজ, যা বর্ষার শেষ দিকে বুরো চাষাবাদে জন্য গেইট আঠকিয়ে পানি সংরক্ষণ করে উপজেরার ৪ শ একর জমি বুরো চাষের আওতায় নিযে আসে।
বর্তমানে আগামী বুরো মৌসুমে বাধে বৃষ্টির পানি ধরে রাখতে না পারলে চাষবাদ হুমকির মুখে। দীর্ঘ ১০ বছর বান্দরবানে কোন প্রকল্প না থাকায় বাঁধ গুলোর কোন সংস্কার করা যাচ্ছে না সাধারণত বুরো মৌসুমে নিচের দিকের পাইব লাইন দিয়ে বুরো চাষা বাধের জন্য পানি সরবরাহ করে পাহাড়ি কৃষকরা বুরো চাষাবাদের পাশাপাশি ফলজ বাগানে সেচের পানির এক মাত্র ঊৎস হিসাবে ব্যবহার হয় এবং বাঁধ গুলোতে সারা বছর মাছ ও হাঁস পালন করে কৃষকরা।
সাধারণ কৃষকের দাবি বিএডিসির ঝিড়ির বাঁধ গুলো কর্তৃপক্ষ দ্রুত মেরামতের ব্যবস্থা নিবে। সোনাইছড়ি ডাংখাই ঝিরি বাঁধের ব্যবস্হাপনা কমিটির সভাপতি মংবা চা মার্মা জানান, আমাদের বাঁধের পানিতে ২৭ একর জমিতে চাষবাদ হয় আমার বাঁধটি এখন ঝুঁকিপূর্ণ মাটি সরে গেছে অতিরিক্ত পানি ধরে রাখা সম্ভব হচ্ছে না যার ফলে আমাদের চাষাবাদ অনিশ্চিত।
এবিষয়ে সোনাইছড়ি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ্যানি মার্ম বলেন, বিএডিসির বাঁধের পানিতে আমার ইউনিয়নের আধিকাংশ জমিতে বুরো চাষ করে কৃষকরা। এবার বন্যায় প্রতিটি বাঁধ কোনা না কোন দিকে ক্ষতি হয়ে গেছে তাই আগামী বুরো মৌসুমে পূর্বে বিএডিসির ঝিরি বাঁধ গুলো মেরামত করা প্রযোজন তা না হলে আমার এলাকার বিশাল জমি বুরো চাষ করতে পারবে না তাই বিএডিসির কতৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ কামনা করছি।
বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদ সদস্য ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা আওযামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ক্যানোওয়ান চাক জানান, অনেক কৃষক আমাকে জানিয়েছে অতি বৃষ্টির কারণে বিএডিসির ঝিরি বাঁধের ক্ষতি হয়েছে এই বাঁধ গুলো মেরামত করা না হলে এলাকার বুরো চাষের ব্যাপক ক্ষতি হবে।
বান্দরবানের বিএডিসির সহকারি প্রকৌশলী আবু নাঈম বলেন, বান্দরবানের বন্যায় আমাদেন অনেক গুলো ঝিড়ির বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যা আগামী বুরো চাষে সেচে প্রভাব পড়বে। উক্ত খাতে আমাদের কোন বাজেট বরাদ্দ ও প্রকল্প না থাকায় এখনো আমরা কোন ব্যবস্থা নিতে পারিনি, তবে আমরা ক্ষতির পরিমাণ সরজমিন পরিদর্শন করে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ কে জানাবো এবং অর্থ বরাদ্ধ পেলে তা দ্রুত এসব বাধ গুলো নতুন ভাবে কাজ শুরু করবো।