নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পার্বত্য রাঙামাটিতে খাগড়াছড়ির পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষের জেরে সকাল থেকেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। শহড়ের মোড়ে মোড়ে পাহাড়ি অস্ত্রধারীদের অবস্থান করতে দেখা গেছে বলেও জানিয়েছে স্থানীয়রা। দুপুর পর্যন্ত চলা পাহাড়ি-বাঙালীদের সংঘর্ষে একজন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ৬০-৭০জন আহত হয়েছে। পুরো শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন প্রতিষ্ঠানসহ ব্যাপকহারে যানবাহন ভাংচুর করা হয়েছে। পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণে শহরজুড়ে ১৪৪ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
শুক্রবার সকালে কোনো প্রকার আগাম ঘোষণা ছাড়াই কয়েক হাজার পাহাড়ি যুবক বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে শহরের জিমনেসিয়াম হয়ে বনরূপা বাজারে এসে মসজিদ, পেট্রোল পাম্পসহ বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালাতে থাকে। এতে করে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পুরো শহরজুড়ে।
মসজিদ-মার্কেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে হামলার ঘটনায় স্থানীয় বাঙালীরা সংগঠিত হয়ে ধাওয়া দিলে পাহাড়িরা পিছু হটে। রাস্তায় চলাচলকারী বাস, ট্রাক ট্যাক্সিতেও হামলা করা হয়। শহরের হ্যাপির মোড়কে কেন্দ্র করে এর দু’দিকে অবস্থান নেয় পাহাড়ি ও বাঙালিরা।
পরবর্তীতে উভয়পক্ষ শহরের বনরূপা, হ্যাপীর মোড়, কালিন্দিপুর, রাজবাড়ি, ষ্টেডিয়াম এলাকা, কল্যাণপুর, ভেদভেদীসহ বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। এতে করে অত্যন্ত ৩০টি যানবাহন ভাংচুরের পাশাপাশি উভয়পক্ষের অর্ধশতাধিক লোকজন আহত হয়। রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ একজন নিহত হওয়ার তথ্য নিশ্চিত করলেও তার নাম-ঠিকানা তাৎক্ষনিকভাবে নিশ্চিত করেননি।
আহতদের মধ্যে বাঙালীদের বেশ কয়েকজনের শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে। এছাড়া আহত পাহাড়িরা মারধর ও ধারালোর অস্ত্রের আঘাতের কারনে আহত হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে। আহতদের মধ্যে ১০/১২ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন, রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক সাদিয়া আক্তার।
রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছেন, আহত অত্যন্ত ৫৪জন হাসপাতালে গিয়েছে। এতে গুরুত্বর আহত ১৯জন হাসপাতালে ভর্তি আছে। আর একজন নিহত হয়েছে। গুরুত্বর আহত ৩ জনকে চট্টগ্রামে রেফার্ড করা হয়েছে।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে দুপুর দুইটা থেকে রাঙামাটি পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন খান।
রাঙামাটি পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন বলেন, “সকালে পাহাড়িদের একটি মিছিল বনরূপায় এসে ফিরে যাওয়ার সময় বাঙালিদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলাসহ বেশ কয়েকটি গাড়িতে ভাঙচুর করে। এরপরই বাঙালি ব্যবসায়ীরা সংঘবদ্ধ হয়ে তাদের পাল্টা ধাওয়া দেয়।”
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, রাঙামাটিতে সকালে অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতি তৈরি হয়। শহরের পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য পুলিশ সেনাবাহিনী বিজিবির কয়েকটি টিম কাজ করেছে।