নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
রাঙামাটি পৌরসভার হ্যাচারী এলাকায় ইয়াবা কাণ্ডে মারামারির জেরে ৬জন আহত হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে রাঙামাটি পৌরসভার ৬ নং ওয়ার্ড হ্যাচারী এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
এঘটনায় আহতদের চিকিৎসার খবর নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের ইমারজেন্সি মেডিকেল অফিসার ডা. এ কে এম মসিয়ত উল্লাহ।
তিনি বলেন, মারামারি করে কয়েকজন রোগী হাসপাতালে এসেছে। আমরা প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে কয়েকজনকে পাঠিয়েছি। একটু গুরুতর হওয়ায় ২জন রোগীকে ভর্তি করা হয়েছে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে আহত ৯নং ওয়ার্ড বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল মান্নান বলেন, ২দিন আগে রাতে ইয়াবা বিক্রির সময় আমরা হাতেনাতে স্থানীয় কয়েকজন যুবককে ধরি। এলাকার ছোট ছেলে এবং এই প্রথম আমরা জেনেছি যে তারা এই নেশা গ্রহণ বা ব্যবসা করে। তাই পরবর্তীতে তারা আর এই কাজ করবে না এমন স্বীকারোক্তির প্রেক্ষিতে তাদের কে ছেড়ে দেই। কিন্তু ওই ঘটনার জের ধরে তারা আজ এভাবে আমাদের উপর অতর্কিত হামলা চালাবে বুঝতে পারিনি।
এঘটনায় আহত ইসাহাকের স্ত্রী জানান, আমার স্বামী হ্যাচারি এলাকায় নাইট গার্ডের চাকরি করে। কয়েকদিন আগে ওই ভবনে ইলেক্ট্রিকের তার চুরি হয়। সেদিন রাতে কয়েকজন ছেলে কে ওই এলাকায় দেখা গেলে আমার স্বামীর টর্চ মার এতে করে তারা দৌড়ে পালিয়ে যায়। পরে খোঁজখবর নিয়ে ওই চক্রের সদস্যদের ডাকা হলে তারা স্বীকার করে তারা ইয়াবা কিন্তু এসেছিল। তখন তাদেরকে বকাঝকা করে ছেড়ে দেওয়া হয় যাতে তারা পরবর্তীতে আর এই কাজ না করে। ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকে শাকিল, বাদশা, নাজমুল ও আব্দুল্লাহ সহ ওই এলাকার বেশ কজন সন্ত্রাসী স্টাইলে হামলা চালায়। এতে তারা আমাকেসহ আমার স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে প্রচন্ড মারধর করে। আমার ছেলে ও মেয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। আমি এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।
এবিষয়ে স্থানীয় মো. ফাহিম জানায়, গত ৯তারিখ হ্যাচারি এলাকার ঘটনা থেকে আজকের মারামারির সূত্রপাত। এতে হ্যাচারি পাড়া, মোল্লা পাড়া ও হাসপাতাল এলাকার বেশ কজন মানুষ জড়িত। সেদিন নাজমুল, হেলাল ও আব্দুল নামে ৩জন যুবক হ্যাচারি পাড়া একটা কোয়ার্টারে ইয়াবা সেবন করতে যায়। তারা তিনজন ইয়াবা সেবন করতে ঢুকলে ওখানকার পাহারাদার তাদের অবস্থান লক্ষ করে টর্চ লাইট মারলে তারা পালিয়ে যায়। তখন ওই পাহারাদার চোর চোর বলে চিৎকার করলে এলাকাবাসী এসে ২জনক কে ধরে ফেলে এবং একজন পালিয়ে যায়। তখন এলাকাবাসী জিজ্ঞাসা করলে তারা জানায়, তারা মাদক সেবন করতে এসেছিল। পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে সাম্প্রতিক সময়ে তাঁতিদলের বহিষ্কৃত নেতা বাদশার নামও আসে।
তিনি আরো জানায়, ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজকে মাদক কারবারি শাকিল ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা মিলে ইফতারের পরে এলাকার চায়ের দোকানে বসে থাকা মুরব্বিদের উপর হামলা চালায়।
এঘটনায় অভিযুক্ত শাকিল ওরফে দেলু জানায়, ২দিন আগে আমার বাইক নিয়ে এলাকার ৩জন ছোট ভাই তার অজ্ঞাতসারে নেশা গ্রহন করতে যায়। সেদিন ওই এলাকায় নাকি চুরি হয়েছে। ওই স্থানে আমার বাইক টি পাওয়ায় এলাকার হানিফ, শাহিন ভাই, মান্না ভাই ও ইসাহাক ভাণ্ডারী সহ ২০-২৫জন মুরব্বি মিলে ছোট ভাই ৩জন কে ব্যপক মারধর করে। মারধর করে তারা আমি ইয়াবা ব্যবসা করি এমন স্বীকারোক্তি নিতে চেষ্টা করে। আমার বাইক টি ব্যবহার করে এলাকার ২/১জন ছোট ভাই ইয়াবা সংগ্রহ করতে গিয়েছে। তবে আমি ইয়াবা খাইনা এবং এর ব্যবসা ও করিনা।
তাঁতিদলের বহিষ্কৃত নেতা বাদশার কাছে জানতে চাইলে মুঠোফোনে তিনি জানান, মারামারির বিষয়ে আমি কিছু জানিনা। আমি একটু অসুস্থ্য। ইয়াবা ব্যবসার সাথে আমি জড়িত নই৷ রাজনৈতিকভাবে ক্ষতি করতে অনেকে হিংসাত্মক মনোভাব পোষণ করে আপনাদের এমন তথ্য দিয়েছে বলেও মনে করেন তিনি।
জানতে চাইলে মামলার তদন্ত অফিসার মো. মোস্তাক আহমেদ বলেন, গত রাতে হ্যাচারী এলাকায় মারামারির ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে (মামলা নং- ৯)। তবে কেউ গ্রেফতার হয়নি৷