সারাবাংলা ডেস্কঃ
বাংলাদেশ সরকারি কর্মকমিশনের (পিএসসি) অধীনে বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় প্রশ্নফাঁসের ঘটনায় প্রতিষ্ঠানটির একাধিক কর্মকর্তাসহ ১৭ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। সিআইডির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা গণমাধ্যম কে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সোমবার (৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে তাদের আটক করা হয়। এই ঘটনায় রাজধানীর পল্টন থানায় মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আটককৃতরা হলেন, পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম ও অবসরপ্রাপ্ত ড্রাইভার সৈয়দ আবেদ আলী।
আটক হয়েছেন নারায়ণগঞ্জের আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তা প্রহরী শাহাদাত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজের মেডিকেল টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান, নোমান সিদ্দিকী, আবু সোলায়মান মো. সোহেল, জাহিদুল ইসলাম, মামুনুর রশীদ, সাখাওয়াত হোসেন, সায়েম হোসেন, লিটন সরকার ও সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।
গত রবিবার (৭ জুলাই) বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টি ফোর পিএসসির ৩০টি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ করলে সিআইডির একটি অভিযানিক দল অভিযান চালিয়ে এই চক্রটিকে গ্রেফতার করে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, গত শুক্রবার পিএসসির অধীনে অনুষ্ঠিত রেলওয়ের উপসহকারী প্রকৌশলী পদে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস করে চক্রটি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এই চক্রের সদস্যরা জানিয়েছেন, তারা ৩৩তম বিসিএস থেকে সর্বশেষ ৪৫তম বিসিএস পরীক্ষাসহ নন-ক্যাডার নিয়োগের একাধিক পরীক্ষায় ও প্রশ্ন ফাঁস করেছে তারা।
এই চক্রের এক সদস্য অফিস সহকারী সাজেদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তিনি উপপরিচালক জাফরকে দুই কোটি টাকা দিয়ে রেলওয়ের প্রশ্ন কিনেছিলেন। পরে তিনি এই প্রশ্ন চাকরিপ্রার্থীদের কাছে বিক্রি করেন।
সিআইডির একজন কর্মকর্তা জানান, পিএসসির অধীনে চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হতে পারে এটা তারা কল্পনাও করেননি। কিন্তু জিজ্ঞাসাবাদে চক্রের একাধিক সদস্য নির্দিধায় সব স্বীকার করেছেন। প্রশ্ন ফাঁস করে আয়কৃত অর্থ দিয়ে তারা বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন।
সিআইডি জানায়, প্রশ্নফাঁসের মামলার পাশাপাশি আটককৃতদের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনেও মামলা দায়ের করা হবে।