নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
নানিয়ারচরে পৈত্রিক সম্পত্তি ভোগ দখল নিয়ে বিরোধের অভিযোগ করেছে মো. আফজাল। উপজেলার ইসলামপুর এলাকার মো. রুস্তম খা’র নামে এই অভিযোগ করেন তারই ভাই মো. আফজাল খা।
শুক্রবার বিকেলে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, দীর্ঘদিন প্রবাসে থাকা অসুস্থ্য আফজাল খা তার পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ পেতে এলাকাবাসীর দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার ভাই রুস্তম ও ইউনুস খা ভাইবোনদের মধ্যে পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগ না করে তারা ২জন মিলেই ভোগদখল করে যাচ্ছে। গতকাল স্থানীয় শালিশে বসলে তা না মেনেই বৈঠক ত্যাগ করেন রুস্তম ও ইউনুস খা। এসময় আমাকে মারতেও তেড়ে আসে রুস্তম। রুস্তম খা তাকে মামলা হামলার ও হুমকি দেয় বলে জানান তিনি।
এবিষয়ে আফজাল খা’র ছেলে জসিম খা জানায়, তার বাবা দীর্ঘদিন প্রবাসে সৌদি আরব ছিলেন। এখন তার পিতা অসুস্থ্য। গত সপ্তাহে তার বাবা পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ চাইতে এলে তাকে মামলা ও মারধরের হুমকি প্রদান করেন তারই চাচা। বাবার পৈত্রিক সম্পত্তিতে ভাইয়ের পাশাপাশি বোনদের ও কোন ভাগ না দেওয়ার কথা জানিয়েছেন রুস্তম খা বলেও জানায় জসিম। এমতাবস্থায় স্থানীয় গণ্যমান্য ও উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাহায্য কামনা করেন তিনি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেশী মো. শাহজাহান জানান, ইউনুস খা, আফজাল খা ও রুস্তম খা এরা তিন ভাই। সম্পত্তির ভাগ তো দিতেই হবে। রুস্তম খা মাঠান জমি থেকে ভাগ দিলেও সে বাড়ির জমি থেকে ভাগ দিতে রাজি না। মূলত বাড়ির জমি ভাগাভাগি নিয়ে তাদের বিরোধ। এর আগে তাদের মাঠের জমি ভাগ হয়েছে। গতকাল এলাকার মিমাংসায় বসা হলে রুস্তম খা বিচার না মেনেই শালিশ ত্যাগ করে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে মুঠোফোনে নানিয়ারচর থানার ওসি আজম উদ্দিন মাহমুদ জানান, আমাদের কাছে এখনও কোন অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আ. সালাম জানান, পৈত্রিক সম্পত্তি ভাগাভাগি কে কেন্দ্র করে আফজাল খাসহ আমার নিকট ওয়ারিশদের একটা অভিযোগ আসে। এর প্রেক্ষিতে আমরা শালিশ কমিটি গঠন করে একটা মিমাংসায় বসি। এসময় রুস্তম খা কোন শালিশ মিমাংসা মানেনি। সে তাদের পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বাড়ির জমির ভাগ না দিয়ে শুধু মাঠের জমি ভাগ দেওয়ার কথা জানান।
তিনি আরো জানান, এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে আমি পরে তাদের আইনি ব্যবস্থা গ্রহনের পরামর্শ দেই। পূর্বে তাদের জমি ভাগ হয়েছে কিনা এ ব্যাপারে আমি অবগত না।
জানতে চাইলে বুড়িঘাট ইউনিয়নের নারী সংরক্ষিত আসনের ইউপি সদস্য নাসিমা বেগম বলেন, রুস্তম খা তার ভাইদের পৈত্রিক সম্পত্তির ভাগ না দিয়ে ভোগদখল করছে এমন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা স্থানীয়ভাবে মিমাংসায় বসি। তখন রুস্তম শালিশনামায় স্বাক্ষর করেনি। সে তাদের বাড়ির জামি থেকে কাউকে ভাগ না দিয়ে মাঠের জমি থেকে তার ভাই বোনদের কে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার কথা বলে।
অভিযোগের ভিত্তিতে এবিষয়ে রুস্তম খা’র নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার বাবার নামে এখানে ৪একর ২৫শতক জমি আছে। তবে বাড়ির ২৫শতকের জায়গায় ১৭ শতক এবং মাঠের জমির ৪একরের জায়গায় ২একর ৬০শতক জমি রয়েছে। আমার সেজ ভাই যখন বিদেশে তখন আমার ভাইয়ের ছেলেরা থানায় অভিযোগ করে যে আমাদের বাবার ভাগের জমি আমরা বুঝে নিতে চাই। তখন থানা থেকে ৫জন পুলিশ সদস্য এসে জমি এলাকাবাসীসহ এই জমি ভাগ করে দেয়। আমি যেহেতু বাড়ির জমিতে ঘর করে ছিলাম তাই মাঠের জমি থেকে ২০শতক জমি ছেড়ে দেই।
তিনি আরো বলেন, আমি ছাড়া আরো ৬জন ওয়ারিশ আছে। বাকি ৫জন অভিযোগ করেনা। শুধু তারাই আমাকে বিভিন্নভাবে হেনস্তা করে যাচ্ছে। মূলত দেশের বাড়িতে আমি বাবার সম্পত্তি থেকে ১কাঠা জমি পেয়েছি সেই জমিটার জন্যই আমার ভাই আমাকে বিভিন্ন্ভাবে হয়রানী করে যাচ্ছে।