অনলাইন ডেস্কঃ
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন জনসম্পৃক্ততা বিঘ্নিত না করে ভিভিআইপিদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি ভিভিআইপিদের জন্য নিরাপত্তা বলয় তৈরিতে সকল সহযোগী এজেন্সির সঙ্গে সুসম্পর্ক, নিবিড় যোগাযোগ ও সমন্বয় বজায় রাখার পাশাপশি ভিভিআইপিদের জনসংযোগের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনায় রাখারও তাগিদ দেন।
শুক্রবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ)-এর ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠান ও নৈশভোজের আগে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণে রাষ্ট্রপতি এ কথা বলেন।
তিনি এসএসএফকে বলেন, ‘প্রজাতন্ত্রের সকল ক্ষমতার মালিক জনগণ। আপনাদের কোনো আচরণে জনগণ যেন কষ্ট না পায় সেদিকে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি সদা পরিবর্তনশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জ ও প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলায় এসএসএফ সদস্যগণকে সর্বদা বলিষ্ঠ মনোবল, প্রশ্নাতীত আনুগত্য ও পেশাদারিত্বের সর্বোত্তম প্রয়োগ ঘটানোর উপদেশ দেন। এসএসএফ-এর দায়িত্ব পালনের প্রতিটি ক্ষেত্র ‘অত্যন্ত স্পর্শকাতর’ উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির চক্রান্ত ও সর্বোপরি আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের কারণে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের নিরাপত্তার বিষয়টি সবসময়ই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও চ্যালেঞ্জিং।
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও অনুসারীদের কাছে ভিভিআইপিরা খুবই জনপ্রিয় ও কিংবদন্তিতুল্য। কিন্তু নিরাপত্তার কারণে সবসময় তারা দেখা-সাক্ষাৎ করতে পারেন না। অতি কঠোরতা ও বাড়াবাড়ির কারণে নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ ও জনগণের মধ্যে যেনো কোনো দূরত্ব বা ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি না হয় সেদিকটিও অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করারও নির্দেশনা প্রদান করেন রাষ্ট্রপতি।
উন্নত প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি এসএসএফ-এর সদস্যদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, উন্নত শৃঙ্খলা, সততা, দায়িত্বশীলতা এবং মানবিক গুণাবলী অর্জনের বিষয়টিও গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে বলেন। এছাড়া সীমিত সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহারের পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সম্পদের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ও রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন এই বিশেষ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান।
১৯৮৬-এর ১৫ জুন, রাষ্ট্রপতির নিরাপত্তা বাহিনী (পিএসএফ) গঠিত হয়, পরবর্তীতে দেশে সংসদীয় সরকার ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারের পর একে বিশেষ নিরাপত্তা বাহিনী (এসএসএফ) নামে নামকরণ করা হয়। এসএসএফ বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধু পরিবার এবং রাষ্ট্রীয় প্রটোকল অনুযায়ী ভিভিআইপি ও বিদেশী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সুরক্ষা প্রদান করে এবং ভিভিআইপিদের উপর সম্ভাব্য হুমকি প্রতিরোধ এবং সক্রিয় হুমকি থেকে ভিভিআইপিদের সুরক্ষায় বেসামরিক প্রশাসন এবং নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে। ভিভিআইপিদের অফিস ও বাসস্থানের নিরাপত্তার দায়িত্বও পালন করে এসএসএফ।
এসময় রাষ্ট্রপতির সহধর্মিনী ড. রেবেকা সুলতানা ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ঊর্ধ্বতন সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে এসএসএফ-এর মহাপরিচালক মেজর জেনারেল এ কে এম নাজমুল হাসান স্বাগত বক্তব্য রাখেন। পরে রাষ্ট্রপতি প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান উপলক্ষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের অংশবিশেষও উপভোগ করেন।