॥ নিজস্ব প্রতিবেদক ॥
ভারি বর্ষনের পর একমাস পেরিয়ে গেলেও কাপ্তাই এলাকায় হ্রদ জমাট করে রাখা কচুরিপানা সমস্যা সমাধানে উদ্যোগ নেয়নি কোনো কর্তৃপক্ষ। এতে কয়েকটি উপজেলার সাথে কাপ্তাই জেটিঘাটের যোগাযোগ দারুণভাবে ব্যাহত হচ্ছে। বিপাকে পড়েছে উপজেলা হতে কৃষিপণ্য বিক্রি করতে আসা কৃষকেরা।
সাম্প্রতিক টানা প্রবল বর্ষণের সময় উজান হতে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের সাথে এই কচুরিপানাগুলো ভেসে এসে কাপ্তাই আপষ্ট্রিম জেটিঘাট এর প্রবেশ মুখে জমা হয়। এতে কার্গো ও কাঁচামাল পারাপার ছাড়াও এলাকার মিল গুলোর কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। কচুরিপানাগুলো স’মিল এলাকা, বাঁশকেন্দ্র এলাকা, জেলেপাড়া এলাকা ও শুকনাছড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় জট বেঁধে রয়েছে।
এখন কাপ্তাই হৃদের বিস্তৃত জলরাশির বদলে চোখে পড়ছে বিশাল আকৃতির সবুজ ক্ষেত। জটের ফলে কয়েক উপজেলার সাথে প্রায় যোগাযোগ সমস্যর সৃষ্টি হচ্ছে। পর্যটকসহ কয়েজ হাজার ব্যবসা-বাণিজ্য ধস নেমে আসছে। ব্যবসায়ীদের মাঝে হতাশা বিরাজ করছে। ৩মিনিটের জায়গায় পৌছতে সময় লাগছে ৪/৫ঘন্টা। তারপরও গন্তব্যস্থলে সঠিক সময় পৌঁছতে সক্ষম হচ্ছে না তারা।
একজন প্রাইমারী শিক্ষক দুঃখ করে ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, ‘আগে গন্তব্যস্থলে পৌছতে খরচ হত ৮শ’এখন লাগছে ২হাজার টাকা’। কাপ্তাই আপষ্ট্রিম জেটিঘাট মুদিদোকান ব্যবাসয়ী নজরুল ইসলাম, কাঠ ব্যবাসয়ী লোকমান হাকিম জানান প্রতি বছর বর্ষা মৌসুম এলে আমাদের দুঃখের সীমা থাকেনা। কচুরিপানা এসে আমাদের ব্যবসায় ধসে নামে। কাপ্তাই ইঞ্জিন চালিত বোট মালিক সমিতি সাবেক সাধারন সম্পাদক শাহীন বুলবুল জানান, এর একটা স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।
কাপ্তাই রিভার গ্রীণ ভেলি ম্যানেজার ইসমাইল জানান হ্রদে কচুরিপানা যানজটের ফলে কোন পর্যটক আর আসছেনা। যার ফলে আমাদের পর্যটকেও ব্যাপক ধস নেমেছে। কাপ্তাই আপষ্ট্রিম জেটিঘাট সাপ্তাহিক হাট শনিবার বসে। এখানে সপ্তাহে একদিন এ হাটে বাঙালী -উপজাতীর মিলন মেলা হয়। ব্যবসায়ীরা বিক্রয়ের জন্য তাদের বিভিন্ন পসরা নিয়ে বসে এবং তা কিনতে এবং দেখতে শনিবার কয়েক হাজার লোক জড় হয়। ফলে উভয় পক্ষের কয়েক লাখ টাকা দিনে আয় হয়ে থাকে। বর্তমানে তাও বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে কাপ্তাই ৪নং ইউপি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, প্রতি বছর এলে বর্ষা ও পাহাড়ি ঢলে কচুরিপানা এসে জেটিঘাট জড় হয়। যার ফলে ব্যবসায়ীসহ সকলের মাঝে দূর্ভোগ সৃষ্টি হয়।আমরা প্রশাসন ও জনগনের সার্বিক সহযোগিতা নিয়ে তা অপসরণ করে থাকি। এবারও কচুরিপানা জট সৃষ্টি হয়েছে আমি কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎকেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করে ৩বার জট অপসরণ করেছি। এছাড়া রাঙ্গামাটি সংসদ সদস্য দীপংকর তালুকদার এমপি ঘটনাস্থলে এসে কচুরিপানা যানজট পরিদর্শন করেছে। এবং ব্যবস্থা নেয়ারজন্য প্রশাসনকে অবগত করেছে বলে উল্লেখ করে।